সনাতন ট্রিবিউন: আমি আজ যে পুরস্কার পেলাম তা আমার জীবনের এখন পর্যন্ত শ্রেষ্ঠ পুরস্কার। আমার সঙ্গীত জীবনের একটি বড় ইচ্ছে ছিলো বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে একটি পুরস্কার নেবার। সেই ইচ্ছে আজ পুরণ হলো। ৪০ বছরের ক্যারিয়ারে অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আমার এই প্রাপ্তি।
আমার চার বোনের সবাই বিদেশে তাদের অনেক মিস করেছি। বাবা-মা বেঁচে থাকলে অনেক খুশী হতেন। আমার এই চলার পথে গীতিকার,সুরকার সঙ্গীত পরিচালক,প্রযোজক সবাইকে আমার কৃতজ্ঞতা।সবচাইতে খুশী হয়েছি যিনি আমাকে "ললিতা" এ্যালবামটির দুর্লভ গানগুলি গাইতে অনুপ্রাণিত করেছিলেন সেই পন্ডিত ব্যাক্তি আমাদের বিদিত লাল দাশ এবার একুশে পদক পেয়েছেন।
এ্যান্ড্রু কিশোরদা সিনেমার গানের রাজা ছিলেন আর আমার সবচাইতে কাছের মানুষ। লুৎফুর রহমান রিটন ভাই আমাকে "তিরিশ লক্ষ্য প্রাণের দামে বাংলাদেশ" এই গানের গীতিকার অমি আনন্দিত তাঁর এই একুশে পদক প্রাপ্তিতে।নায়ক আলমগীর ভাই,রুপাদি, শিমুল মোস্তফা,কাওসার ভাই এবং আমার প্রিয় ডলি জহুর যিনি "পাতাল পুরির গল্প"এই টেলি ফিল্মে আমার "মা হয়েছিলেন তাঁদের সবাইকে অভিন্ন্দন।
বিটিভির সকল প্রযোজক বিশেষ করে মরহুম মোস্তফা কামাল সৈয়দ,উনার কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ। কৃতজ্ঞ আবদুল্লাহ আল মামুন, কাজী কাইয়ুম,মাহবুবে আলম,খ.ম. হারুন,মুসা আহমেদ, ফখরুল আবেদীন দুলাল,চিত্রগ্রাহক আনোয়ার হোসেন বুলু,সমীর কুশারী ও রিয়াজ উদ্ধিন বাদশা আমার প্রথম মিউজিক ভিডিও স্যাটেলাইটে "চম্পাবতী"র পরিচালক জাহিদ হোসেন, ক্রিকেটের গান গুলোর গীতিকার শহীদুল আজম,আসাদুজ্জামান নুর,পরিচালক রম্য রহিমের কাছেও কৃতজ্ঞ। আমার মিউজাক ভিডিও নির্মাতা গাজী শুভ্র ও গোলাম সোহরাব দোদুলের কাছেও কৃতজ্ঞ।
আমার অন্যতম সুরকার প্রয়াত প্রণব ঘোষ তিনিও এই অর্জনে বেঁচে থাকলে হতেন আনন্দিত। সাবের ভাই আমার কিছু গানের গীতিকার ও "এ মন আমার পাথর তো নয় ও বুকের জমিনের মিউজিক ভিডিও নির্মাতা ও আমার অত্যন্ত কাছের মানুষ ছিলেন। আমার প্রথম বিটিভি প্রযোজিকা শাহিদা আরবী ও উপস্থাপক অভিনেতা আল মামুন ভাইয়ের কাছেও কৃতজ্ঞ। সবচাইতে বেশী গানের স্টার কীবোর্ডিষ্ট মাইলসের মানাম আহমেদ আমার প্রিয় বন্ধু তার কাছেও আমি কৃতজ্ঞ।
ভারতের মিঠুন চক্রবর্তী আমাকে প্রথম তাঁর ছবি "ভাগ্য দেবতা"তে গান করিয়েছিলেন। বলিউড মিউজিক এ্যাওয়ার্ডের চেয়ারম্যান কমল দন্দনা, যার আমন্ত্রণে ২০০০ সালে প্রথমবারের মতোন এ আর রেহমান,হলিউডের হোসে ফেলিসিয়ানোর মতোন সুপারস্টারদের সাথে স্টেজ শেয়ার করতে পেরেছিলাম। ক্রিকেট বোর্ডর প্রাক্তন সভাপতি জনাব সাবের হোসেন চৌধুরী থীম সঙ্গীতের Idea কে সমর্থন করেছিলেন ১৯৯৮ সালে মিনি বিশ্বকাপ ক্রিকেটে।
শুধু তাই নয় 2000 সালে বাংলাদেশ যখন টেস্ট স্ট্যাটাস পায় তখন বিসিবি থেকে অফিশিয়াল চিঠি প্রদান করা হয় এবং শহীদুল আজমের লিখা ও আমার সুর করা ও গাওয়া চার মারো ছক্কা মারো পৃথিবীতে প্রথম বারের মতোন ক্রিকেট থীম সঙ্গীতের জন্ম দেয়। তাই সাবের ভাইয়ের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। পেপসী ইন্টার ন্যাশনেল সাউথ ইষ্ট এশিয়ায় আমীর খানের সাথে আমাকেও শুভেচ্ছা দুত মনোনীত করায় ওদেরও ধপ্যবাদ। TVC পরিচালক Genessis এর চেয়ারম্যান প্রহল্বাদ কাক্করকেও ধন্যবাদ।
আমি এসিড সার্ভাইভারস ফাউন্ডশনের কাছে কৃতজ্ঞ তাঁদের ঐকান্তিক ইচ্ছাতেই "সৎ মানুষ কখোনো এসিড ছোড়েনা" এই গানটি আমি রচনা করেছিলাম ও সুর করেছিলাম। বিবিসি এশিয়া টুডেতে এই গানটি ২০০০ সালেই দেখানো হয়।
আমার প্রথম এ্যালবাম "হ্যামিলনের বাঁশীওয়ালা"র প্রযোজক ডিসকো শাহীন ভাইয়ের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। সাউন্ভেক সারগাম বিউটি কর্ণার টোনাটুনি ও সঙ্গীতাও প্রশংসার দাবীদার। প্রথম এ্যালবামের সব গীতিকার সুরকারদের কাছেও কৃতজ্ঞ। বিশেষকরে পান্না দাশ,বিদ্যুৎ কর,বুলবুল আনাম, অজয় পাল,মকসুদ জামিল মিন্টু ও বদরুল আলম বকুল।
সেলিম হায়দার ও পেয়ারু খান মিলন মামা অনেক গানেই বাজিয়েছেন।।তবে মাহফুজ ভাই হ্যামিলনের বাঁশীওযালা যেভাবে লিখেছেন ও প্রয়াত আবু তাহের ভাই অসাধারণ সুর করেছিলেন তা বলাই বাহুল্য। আমার মামা সুজেয় শ্যাম অনেক বড় সঙ্গীত পরিচালক তিনিও একুশে পদক ও একাধিকবার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন।
তাঁর সুরে প্রথম আমি দ্বিতীয় এ্যালবামেই হৈমন্তী শুক্লার সাথে গান গাই। হানিফ সংকেত ভাই যদি "শেষ চিঠি"গানটা ইত্যাদিতে না চালাতেন তাহলে ৯১ সালে হয়তো প্রথম বাংলা গানের মিউজিক ভিডিও বাংলাদেশের মানুষ দেখতে পেতোনা। আমার কিছু স্পেশাল মানুষ কালজয়ী গীতিকার নজরুল ইসলাম বাবু, সঙ্গিত পরিচালক দেবু ভট্টাচার্য,বিখ্যাত সুরকার লাকী আকন্দ, জনপ্রিয় আইয়ুব বাচ্চু,গুণী গীতিকার কাওসার আহমেদ চৌধুরী,সুরকার লোকমান হাকিম অন্যতম। ভারতে তারা বাংলা চ্যানেলের তৎকালীণ CEO গুহ দা। উনি আমাকে অনেক প্রোগ্রামেই তারা বাংলায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
অনেক লম্বা ক্যারিয়ার তাই অনেক কিছু মনেই না থাকা স্বাভাবিক। করোনার পর অনেক কিছুই মনে থাকেনা। তবে শ্রদ্ধেয় মাসুদ করিম,কবির বকুল,মিলন খান আমার বেশী সংখ্যক গানের গীতিকার।লুৎফুর রহমান রিটন, লিটন অধিকারী রিন্টু,শহীদুল্লাহ ফরায়জী,অরুণ চৌধুরী,আহমেদ রিজভী,আশেক মাহমুদ আরমান খান, অশোক কুমার দে আমার অনেক জনপ্রিয় গানের গীতিকার।
আমার মনে পড়ে সঙ্গীত পরিচালক ফরিদ আহমেদ,আলী আকবর রুপু 'ও গীতিকার কাজলের কথা। শাকিলা আপা আমার লিখা ও সুরের গান "ভুলিতে পারিনা তারে ভোলা যায়না" গেয়ে ধন্য করেছেন। আমার সাউন্ড ইন্জীনিয়ার আজম বাবু ও সমীর দাশ,ভারতের সঙ্গীত পরিচালক রকেট মন্ডল।
আমি ফিল্মে প্রথম গান করি সত্য সাহা মামার ছবি রাম রহিম জনে,গাজী মাজাহারুল আনোয়ার মামার লিখা। সিনেমায় আমি আলাউদ্দিন আলী মামা,আনোয়ার পারভেজ মামা,আলম খান মামা ও আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল মামার সাথে কাজ করেছি আমি ধন্য। আমার পরিচালক যারা জোর করেই অভিনয়ের মাঠে আমাকে নামিয়েছিলেন তাদের মাঝে বেগম মমতাজ হোসেন,ইমদাদুল হক মিলন,নার্গিস আকতার,শাকুর মজিদ,আরিফ খান অন্যতম। তবে নার্গিস আক্তারের "পাতাল পুরির গল্প"টেলিফিল্মের সুবাদে কলকাতায় ফেস্টিভেলে সত্যজিৎ রায়ের চারুলতার বিখ্যাত তারকা মাধবী চ্যাটার্জী আমাকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করেছিলেন নায়ক হিসেবে।
আমার জীবনে শ্রদ্ধেয় সাংবাদিকদের মধ্যে আহমেদুজ্জামান চৌধুরী,সাহাদাৎ চৌধুরী, মানব জমিনের মতি ভাই,মীজানুর রহমান,আরেফীন বাদল,চিন্ময় মুৎসুদ্দী,আকবর হায়দার কিরণ,অরুণ চৌধুরী,হাবিব ভাই,প্রয়াত আওলাদ ভাই,জুটন চৌধুরী আফতাব ভাই ও শহীদুল আজম অন্যতম।
আমি কৃতজ্ঞ এমিরেটস অধ্যাপক ডক্টর মন্জুরুল ইসলাম স্যারকে আমার নাম একুশে পদকের জন্য প্রস্তাব করায়। আর যারা অভিন্দন জানিয়েছেন ও পোষ্ট দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত বাংলাদেশের ক্রিকেট ব্যাক্তিত্ব রকিবুল হাসান, চ্যানৃল আইয়ের কর্ণধার ও শিশুতোষ লেখক ফরিদুর রেজা সাগর,মঞ্চ সারথি আতাউর রহমান,সাংবাদিক ব্যাক্তিত্ব অজয় দাশ গুপ্ত , অর্থনিতীবিদ মামুনুর রশিদ, জনপ্রিয়
পরিচালক হানিফ সংকেত, মাইলসের হামিন ভাই,মানাম আমমেদ,সঙ্গীত পরিচালক নকিব খান,কাজী হাবলু,গায়ক ডক্টর অরুপ রতন চৌধুরী,সাধৃর লাউ গানের প্রথম গায়ক হিমাংশু গোস্বামী,মনির খান, রবি চৌধুরী,এস ডি রুবেল আঁখি আলমগীর,আমার প্রিয় শহীদুল্লাহ ফরায়জী,কবির বকুল ও মিলন খান। পোষ্ট দিয়েছেন আনিসুর রহমান তনু ভাই কাজী হাবলু ভাই ও ডক্টর আশীষ চক্রবর্তী সবার নাম দিতে না পারায় ক্ষমা প্রাথী। আমার পরিবার টুম্পাদেব ও শ্রেয়াণ দেবকেও ধন্যবাদ।